রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি:: শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় থেকে বিগত তিন মাসে চুরি হয় ২০টি ট্রান্সফরমার। এতে রাষ্ট্রিয় ক্ষতিসহ গ্রাহকরা চরম আর্থিক ক্ষতি ও সামাজিক বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হলে পুলিশ গোপন অনুসন্ধান করে দুই চোরকে মালামালসহ আটক করে।
শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাই মালামালসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়, এদেরমধ্যে একজন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী । আটককৃতরা হলো দূর্গানগর এলাকার মৃত নুরুল আমিনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৫) ও উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের আঐ গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে ছন্দু মিয়া (৩৬) ।
আটককৃতদের কাছ থেকে চোরাই মালামালের পাশাপাশি চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।
মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো শাথাওয়াত হোসেন জানান, বিগত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক হারে ট্রান্সফরমার চুরি হচ্ছে। জানুয়ারি ২০২৩ হতে বিভিন্ন সাইজের ২০ টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে যার কারনে ১১,৩৬,১৪৯ টাকার সরকারি সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে।
এতে চুরিকৃত ট্রান্সফরমার এর আওতাধীন গ্রাহকরা চরম আর্থিক ক্ষতিসহ সামাজিক বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃক প্রতিনিয়ত ট্রান্সফরমার চুরি প্রতিরোধে উঠান বৈঠক, গনশুনানি, মাইকিং ও লিফলেট প্রচার করা হয়।
শ্রীমঙ্গল থানা এসআই রাকিবুল হাছান জানান, গত ১০ এপ্রিল রাতে এ চক্র শ্রীমঙ্গল থানাধীন দুর্গানগর এলাকা থেকে ১টি ১০ কেভিএ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির ঘটনার পরই তারা চোর চক্রের সন্ধানে তদন্ত শুরু করে। গোপন সোর্সের মাধ্যমে শ্রীমঙ্গল থানাধীন আঐ গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো: ছন্দু মিয়াকে(৩৬) আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃত ছন্দু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, গত ১০ এপ্রিল রাতে তার কয়েকজন সহযোগীসহ ট্রান্সফরমারটি চুরি করে। চুরি করা ট্রান্সফরমারের কিছু তামার তার দুর্গানগর গ্রামের হাবিবুর রহমান এর ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করে এবং কিছু তামার তার আরেক হাবিবুর রহমান নিকট আছে।
তিনি জানান, ছন্দু মিয়াকে সাথে নিয়ে দুর্গানগর গ্রামের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানকে তার বসত ঘর থেকে আটক করা হয় এবং দুর্গানগর বাজারস্থ তার ভাঙ্গারি দোকান থেকে সাক্ষীদের সম্মুখে ১৩ এপ্রিল রাত ১ টা ৩৫ মিনিটের ট্রান্সফরমারের ছয় কেজি তামার তার উদ্ধারপূর্বক সময় জব্দ করা হয়। বাকী চোরাই মালামাল উদ্ধারের জন্য গুলগাঁও গ্রামের হাবিবুর রহমানের বসতবাড়িতে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হাবিবুর রহমান দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনদের সম্মুখে হাবিবুর রহমান পাগলার বসত ঘরে তল্লাশী করে আরও চার কেজি তামার তার উদ্ধার করা হয়। এসময় হাবিবুর রহমানের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত ১ টি লোহার তৈরী ১৮” বোল্ট কাটার, ১ টি লোহার তৈরী ১৪” বোল্ট কাটার, ১ টি কাঠের হাতল যুক্ত হাতুড়ি, লোহার তৈরী ১টি ১৮” পাইপ রেঞ্জ, ২টি ১০” স্লাইড রেঞ্জ, ব্লেডসহ ১টি হেস্কো ফ্রেম, ১টি স্টার স্ক্রু ড্রাইভার ১১” এবং ১টি ওয়েট মিটার উদ্ধার করা হয়।